মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩
প্রকাশিত: রবিবার, মে ২, ২০২১
প্রার্থী হিসেবে ঐশী ঘোষের দেশজোড়া পরিচিতি আবার ৪৫ বছরের দুর্ভেদ্য বাম ঘাঁটি, দুটোই ছিল প্লাস পয়েন্ট। কিন্তু ভোটের ফল বলছে সিপিআইএমের দুটো ‘প্লাস’ কে ভোটাররা ‘মাইনাস’ করে দিলেন। পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়া থেকে পরাজিত হলেন সংযুক্ত মোর্চার সিপিআইএম প্রার্থী ঐশী ঘোষ। এই কেন্দ্রে টিএমসি জয়ী সাত হাজারের বেশি ভোটে। খবর-কলকাতা২৪
জামুড়িয়া থেকে ঐশীর পরাজয়ের সংবাদে দেশজুড়ে চর্চা চলছে। কারণ, দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী। তিনি ছাত্র আন্দোলনের অতি গুরত্বপূর্ণ নেত্রী। ফলে ঐশী প্রার্থী হতেই সাড়া পড়ে দেশে। তিনি পরাজিত হতেই ফের সাড়া পড়েছে। ১৯৭৭ সাল থেকে টানা জামুড়িয়ায় জয়ী সিপিআইএম এবার ২০২১ সালে হারল।
তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রান্ত হয়ে রক্তাক্ত হয়েছিলেন দুর্গাপুরের বাসিন্দা ঐশী। তাঁর সেই ছবি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন ফেলে দেয়। অভিযোগ, আরএসএসের শাখা সংগঠন এবিভিপি হামলা করে। ঐশীর উপর হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে প্রবল আন্দোলন ছড়ায়। সেই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশে টিএমসিপি ছাত্র সংগঠন একযোগে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের সঙ্গে বিক্ষোভ দেখায়।
বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র ছিল জামুড়িয়া। ঐশীর জন্য গতবারের সিপিআইএম বিধায়ক জাহানারা খান কে প্রার্থী করা হয়নি। দলীয় শৃঙ্খলা মেনে লাগাতার প্রচার করেন জাহানারা। জামুড়িয়ার সিপিআইএমের সংগঠন মজবুত থাকায় ঐশীকে নিয়ে বাম মহলে আশা ছিল প্রবল। ফলাফল বলছে, ভাঙা পায়ে মমতা যা খেলেছেন তাতে কুপোকাত দেশের সর্বাধিক আলোচিত ছাত্র ইউনিয়নের নেত্রী। যার উপর হামলায় মমতা নিজেও গর্জে উঠেছিলেন।
মোদী বিরোধী তথা বিজেপি বিরোধী ভূমিকায় ঐশী ঘোষ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান একই। তবে তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিআইএম পরস্পর বিরোধী। সেই আঙ্গিকে জামুড়িয়ায় ঐশীর লড়াই ছিল বিশেষ আলোচিত। তিনি হারলেন। সাড়ে চার দশকের বাম দুর্গ জামুড়িয়ায় উড়ছে জোড়াফুল পতাকা। শিল্প শহর দুর্গাপুরের বাড়িতে ফিরে ফের জেএনইউ ইউনিয়নের বামশক্তি রক্ষায় মন দেবেন ঐশী।