বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩

শেখ রেহানার ৬৯তম জন্মদিন আজ

প্রকাশিত: মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার ৬৯তম জন্মদিন আজ ১৩ সেপ্টেম্বর।

১৯৫৫ সালের এই দিনে তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। অনেকেই মনে করেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব যেভাবে ছায়াসঙ্গী হিসেবে পেছন থেকে অনুপ্রেরণা ও সাহস জুগিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অধিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাতে ভূমিকা রেখেছিলেন, ঠিক একইভাবে বড় বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাবার স্বপ্ন সোনার বাংলা বিনির্মাণে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করতে পেছন থেকে অনুপ্রেরণা এবং সহযোগিতা করে যাচ্ছেন ছোট বোন শেখ রেহানা।

৭৫-এর ১৫ আগস্টের চরম দুঃসময়ের পর শেখ হাসিনা যখন দেশ ও আওয়ামী লীগের প্রয়োজনে গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখনও তিনি স্তম্ভের মতো শক্তি জুগিয়েছেন অন্তরালে থেকে; যা আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে। তাইতো খোদ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিভিন্ন সময়ে ঘরোয়া আলোচনায় বলতে শোনা গেছে, শেখ রেহানা ছাড়া তিনি অচল, শেখ রেহানা ছাড়া তিনি পরিপূর্ণ নন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে যখন সপরিবারে হত্যা করা হয়, তখন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে সেসময় জার্মানিতে ছিলেন শেখ রেহানা। শেখ হাসিনার স্বামী এম ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল ছিল জার্মানির কার্লসরুইয়ে। পরে দুজনই ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।

ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অনুমোদনে ১৯৭৫ সালের ৩ অক্টোবর শেখ হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া দিল্লিতে ভারতীয় আণবিক শক্তি কমিশনের অধীনে আণবিক খনিজ বিভাগে যোগদান করেন। শেখ রেহানা বড় বোনের সঙ্গে দিল্লিতে চলে আসেন। এখানে কিছুদিন অবস্থান করার পর তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন এবং তা লাভ করেন।

১৯৭৭ সালের জুলাই মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক শফিক সিদ্দিকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শফিক সিদ্দিক সেই সময়ে সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণারত ছিলেন। সেখানেই তারা থাকতেন।

এই দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি। একমাত্র ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত এবং আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি। আর সবার ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী লন্ডনে ‘কন্ট্রোল রিস্কস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্লোবাল রিস্ক অ্যানালাইসিস এডিটর।

শেখ রেহানা প্রথম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাবা শেখ মুজিবসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। ১৯৭৯ সালের ১০ মে বিশ্বমানবতার কাছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তোলেন। সেদিন সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠান থেকে বোন শেখ হাসিনার পক্ষে প্রথমবারের মতো ঘৃণ্য ওই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তোলেন তিনি। সেদিন শেখ রেহানা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, জাতিসংঘের মহাসচিব, জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কমিশনের চেয়ারম্যান, আমেরিকার কংগ্রেসের হিউম্যান রাইটস কমিটির চেয়ারম্যান, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের প্রধানদের কাছে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচারের প্রশ্নে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও সক্রিয় রাজনীতিতে সামনে আসেননি শেখ রেহানা। তবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আওয়ামী লীগের প্রতিটি সংকটে বড় বোন শেখ হাসিনার পাশে থেকে সহযোগিতা করে গেছেন।

সর্বশেষ

সর্বশেষ