শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, মে ১৮, ২০২১
যত বড় অপরাধ সংঘটনের শঙ্কাই থাকুক না কেন, পুলিশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ ছাড়া আর কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন অপরাধীকেও আটক রাখতে পারে না। যুক্তিসঙ্গত সময়ের অতিরিক্ত কাল যদি কাউকে কোথাও আটক রাখা হয় তাহলে যারা আটক রেখেছে তারা অবশ্যই আইন ভঙ্গ করেছে এবং তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ব্যক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে, আইন বহির্ভূত যে কোনো ধরনের আটক রাখার ঘটনা অপহরণ, গুম ও হত্যা-প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচনার যোগ্য।
কোনো অবস্থাতেই কোনো স্থানেই একজন নাগরিককে কোনো কর্তৃপক্ষই শারীরিকভাবে হেনস্থা করতে পারে না। এটা অবশ্যই বে-আইনী।
পুলিশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ ছাড়া আর কেউ কোনো নাগরিকের দেহ বা নাগরিকের ব্যবহার্য্য অন্য কিছুতেই তল্লাশি চালাতে পারে না। যদি কেউ অমন করে তবে তা অবশ্যই বে-আইনী, শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং শিষ্টাচার বহির্ভূত ভয়ানক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচ্য।
সকল নাগরিকের যে কোনো সরকারি অফিসে যাওয়ার, তথ্য চাওয়ার ও তা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি কোনো তথ্য জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে তবেই কেবল কোনো কর্তৃপক্ষ তথ্য দিতে অস্বীকার করতে পারে। এ ছাড়া অন্য কোনো তথ্য দিতে অস্বীকার করা আইনের লঙ্ঘন।
সরকারি অফিসে খরচ হওয়া প্রতিটি পাই পয়সার হিসাব দেশের যে কোনো সাধারণ নাগরিক চাইতে পারেন এবং সংশ্লিষ্ট অফিস তা দিতে আইনত বাধ্য।
যে ধরনের তথ্য-উপাত্তই হোক না কেন, যতক্ষণ না কোনো তথ্য-উপাত্ত অন্য কোথাও ব্যবহৃত হচ্ছে বা প্রকাশিত হচ্ছে ততোক্ষণ পর্যন্ত সেই তথ্যের গোপনীয়তা ফাঁস হওয়ার অভিযোগ বানোয়াট ও অগ্রহণযোগ্য।
রোজিনা ইসলাম একজন স্বনামধন্য, বিখ্যাত সাংবাদিক, এটির চেয়েও বড় কথা তিনি এই রাষ্ট্রের একজন সম্মানিত নাগরিক। একজন নাগরিক রোজিনা ইসলামকে আটক, অপমান ও শারীরিক নির্যাতন নাগরিক অধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
রাষ্ট্র-সরকারের কর্মচারীরা কোনো নাগরিককে সামান্যতম অপমানও করতে পারে না। এই ঔদ্ধত্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সরকারের যেসব কর্মচারী নাগরিকের অধিকার প্রকাশ্যে লঙ্ঘন করেছে, তাদের সকলের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার উদ্যোগ নাগরিক সমাজকে নিতেই হবে।
মনে রাখা দরকার, একজন নাগরিকের গায়ে হাত তোলে, একজন নাগরিককে আটক রাখে বা তাকে অপমান করে এমন ধরনের সরকারি কর্মচারীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করা, তাদের বিচার দাবি করা কেবল সাংবাদিক সমাজের কাজ নয়, রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অনিবার্য কর্তব্য।
লেখক: আর রাজী
সহকারী অধ্যাপক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।