শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রকাশিত: সোমবার, এপ্রিল ১২, ২০২১
বান্দরবানে বসবাসরত মারমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে আকর্ষনীয় উৎসব হলো সাংগ্রাই। পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে নানা আয়োজনে কয়েক দিনব্যাপী জাঁকজমকভাবে উদযাপন করা হয় নানা অনুষ্ঠান। তবে করোনা আর লকডাউনে গত বছরের মত এবারে ও ম্লান হয়ে গেছে সাংগ্রাই উদযাপন। আর এই উৎসব উদযাপন করতে না পারায় ক্ষুদ্র-নৃগোষ্টিদের পাশাপাশি বাঙ্গালী ও পর্যটকদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে।
চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু, মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই, তংচঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের বিষু, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের এই উৎসব বৈসু নামে পরিচিত হলেও সকলে বর্ষ বিদায় এবং নববর্ষকে বরন উপলক্ষে এই উৎসব গুলো পালন করে থাকেন। কিন্ত করোনা ভাইরাস এর কারনে এবারও বান্দরবানে হচ্ছে না প্রাণের বৈসাবী উৎসব।
বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠির মধ্যে চাকমারা বলে বিজু, মারমা-রাখাইনরা বলে সাংগ্রাই, তংচঙ্গ্যারা বলে বিষু আর এসব কিছুর সংমিশ্রণে পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করার উৎসবের নামই হলো বৈসাবি।
যুগযুগ ধরে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের বন্যায় তাদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান এ সামাজিক উৎসবটি পালন করে আসছিল, বান্দরবানে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলো। প্রত্যেক বছর চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষবরণ উপলক্ষে ধুমধাম করে পালন করা হতো উৎসবটি। কিন্তু করোনা মহামারী পরপর দুটি উৎসব কেড়ে নিল পাহাড়িদের প্রাণের উৎসবটিকে। উৎসবটিকে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী ‘বৈসুক’, মারমা সম্প্রদায় ‘সাংগ্রাই’ এবং চাকমারা ‘বিজু’ নামে পালন করে। তিনটি জনজাতির ভাষায় আদ্যাক্ষর মিলিয়ে সংক্ষেপে উৎসবটির নামকরণ ‘বৈসাবি’।
করোনার কারণে এবারও থাকছে না বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা। থাকছে না উৎসব। এছাড়া উৎসবটিকে ঘিরে বান্দরবানে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সরকারি বেসরকারি সংস্থা ব্যাপক কর্মসূচির আয়োজন করে থাকে। করোনা মহামারীতে দুই বছর হারিয়ে গেল এসব উৎসব আর উচ্ছ্বাস।
কিন্ত করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই বছরেও সমস্ত আয়োজন বাতিল করেছেন স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ। এ পরিস্থিতিতে সবার মত একটাই- সেটা হল এখন উৎসব নয়। সবার কর্তব্য নিরাপদে থেকে দুর্যোগ মোকাবেলা।
বান্দরবান সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান য়ইসা প্রু মারমা আরো বলেন, কোভিড ১৯ কেটে গেলে হয়তো আগামী বছর আরো জাঁকজমকভাবে আমরা আমাদের এই সাংগ্রাই ব্যাপক আয়োজনে উদযাপন করবো।
বান্দরবান সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটি ২১এর সাধারন সম্পাদক শৈটিংওয়াই মারমা বলেন, করোনার কারণে এবারও গতবছরের মত কোন জমকালো আয়োজন বান্দরবানে হবে না তবে শুধুমাত্র ধর্মীয় প্রার্থনা আর ধর্মীয় রীতিনীতি সম্পাদন করা হবে।
সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটি ২১ এর সাধারন সম্পাদক শৈটিংওয়াই মারমা আরো বলেন, করোনার জন্য আমরা সবাই সতর্ক রয়েছি, তাই প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী এবারে বান্দরবানে কোন আয়োজন হবে না।
“আবার জমবে মেলা, হাট খোলা বটতলা” আবার আসবে দিন সুদিন, যেইদিন করোনা মুক্ত হবে এই ধরনী, সকলের এই প্রত্যাশা।