মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৯, ২০২১
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
প্রতিদিন কমপক্ষে ১ লক্ষ করোনা টেস্ট, বিনামূল্যে সকলের করোনা চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা, হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট নির্মাণ করে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ, বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণ করে করোনা চিকিৎসা করা; লকডাউনে শ্রমজীবীদের জন্য ১ মাসের খাদ্য ও নগদ ৫ হাজার টাকা প্রদান, মধ্যবিত্তদের জন্য স্বল্পমূল্যে রেশনিং চালু এবং বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, দায়ি এস আলমের মালিক ও পুলিশের শাস্তি, নিহত-আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, কলেজ ছাত্র মুনীয়া হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন, বসুন্ধরার এম ডি সায়েম সোবহান আনভীরকে গ্রেপ্তার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় নগরীর চেরাগী পাহাড় চত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাম জোটের জেলা সমন্বয়ক ও সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক কমরেড অশোক সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মৃণাল চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলন জেলা সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমি, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সদস্য সচিব শফি উদ্দিন কবির আবিদ, বাসদ জেলা কমিটির সদস্য রায়হান উদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, “স্বাস্থ্যখাতে সমন্বয়হীনতা ও সীমাহীন দুর্নীতি লুটপাট জনগণের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। কে করোনায় আক্রান্ত, কে আক্রান্ত না, কে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা জানা যাচ্ছে না। তাই আমরা দাবি করেছি-গণহারে অর্থাৎ প্রতিদিন কমপেক্ষ ১ লক্ষ করোনা টেস্ট করাতে হবে।
সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়হীনতা প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দ বলেন, সিএমএসডি গত ৮ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে বলেছে ১৫/২০ দিনের করোনা পরীক্ষা কীট আছে অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে কীটের ঘাটতি নাই। তাহলে কোনটা ঠিক। জনগণ কোনটা বিশ্বাস করবে। করোনা মোকাবেলা করতে হলে সঠিক তথ্য জনগণকে জানাতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্তেই বেরিয়েছে সরকারি ৯ হাসপাতালে ৩৭৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ৩৫০ টাকার কম্বল আড়াই হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। অথচ আজ পর্যন্ত কোন দুর্নীতির বিচার না হওয়ায় স্বাস্থ্যে দুর্নীতি লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে। নেতৃবৃন্দ স্বাস্থ্যে দুর্নীতি বন্ধ এবং দুর্নীতির সাথে যুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ভ্যাকসিন নিয়েও সরকারের সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল তা এখন প্রমাণীত। একটি মাত্র উৎসের উপর নির্ভর করা মোটেও সমিচীন হয়নি। আর সরকার সরাসরি চুক্তি না করে বেক্সিমকোকে বাণিজ্য করার সুবিধা দিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যেই তা বেরিয়ে এসেছে। নেতৃবৃন্দ বেক্সিমকোর বিরুদ্ধে সরকারকে মামলা করার দাবি জানান একই সাথে সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদেরকেও এ ব্যাপারে সুয়োমটো মামলা করার আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ দেশেই সরকারিভাবে ভ্যাকসিন তৈরির জন্য ৬টি টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটকে আধুনিকায়ন করা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন ও দক্ষ জনবল নিয়োগ করার দাবি জানান এবং সকল নাগরিকের করোনা চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন বিনামূল্যে প্রদানের দাবি জানান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ভারত থেকে শিক্ষা নিয়ে সকল হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসিয়ে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের দাবি জানিয়ে বলেন নাহলে আমাদেরও সমূহ বিপদে পড়তে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউন একটি উপায় কিন্তু একমাত্র পথ নয়। কিন্তু সরকার লকডাউনের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পন্থা না নিয়ে দায়সারা পদক্ষেপ নিয়েছে। অর্থাৎ ক্যাটাগরি ভাগ করে সংক্রমণের মাত্রা ভেদে লকডাউন বিধিনিষেধ দেয়া উচিত ছিল। লকডাউনে বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবীদের জন্য খাদ্য-নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছে আমাদের এখানে তা করা হয়নি ফলে লকডাউন তামাশায় পরিগণিত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ ক্যাটাগরি ভাগ করে লকডাউন এবং লকডাউনে শ্রমজীবীদের জন্য ১ মাসের খাদ্য ও নগদ ৫ হাজার টাকা প্রদানের দাবি জানান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান ভোট ডাকাতির সরকার মালিক তোষণকারী, তাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে এস আলম গ্রুপ বাঁশখালীতে করোনার মধ্যেও গুলি করে ৭ জন শ্রমিক হত্যা করেছে। নেতৃবৃন্দ বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও দায়ি এস আলম গ্রুপের মালিক এবং পুলিশের শাস্তি দাবি করে নিহতদের আজীবনের আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় একেকটি তথাকথিত শিল্প গ্রুপ বেক্সিমকো, এস আলম, বসুন্ধরা একদিকে লুটপাট করছে; মানুষ খুন করছে অন্যদিকে মানুষের অসহায়ত্ত্বকে পুঁজি করে নারীদের সম্ভ্রম নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।
নেতৃবৃন্দ কলেজ ছাত্রী মুনীয়ার হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন এবং অভিযুক্ত বসুন্ধরা গ্রুপের এম ডি সায়েম সোবহান আনভীরকে গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।