বুধবার, ৩১ মে ২০২৩

ফোর্বসের অনূর্ধ্ব ৩০ তালিকায় সাত বাংলাদেশি

প্রকাশিত: শুক্রবার, মে ১৯, ২০২৩

নগর ডেস্ক :

২০২৩ সালের ‘ফোর্বস থার্টি আন্ডার থার্টিতে’ ৩০ অনূর্ধ্ব ৩০ শীর্ষক এশিয়া ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়েছেন সাত বাংলাদেশি তরুণ।

ভোক্তা প্রযুক্তি, মিডিয়া, বিপণন ও বিজ্ঞাপন এবং সামাজিক প্রভাব এ তিনটি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ওই তিনজনকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

বিখ্যাত বিজনেস জার্নাল ফোর্বস ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০’ তালিকা প্রকাশ করে। ব্যবসা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা ৩০ বছরের কম বয়সী ৩০ জনকে নিয়ে তালিকাটি তৈরি করা হয়।

২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য মোট ২৫ জন বাংলাদেশির নাম এ তালিকায় স্থান পেয়েছে।

এবার তালিকায় যাদের নাম এসেছে, তারা হলেন- মিডিয়া, বিপণন ও বিজ্ঞাপন ক্যাটাগরির অধীনে মার্কোপোলো.এআই-এর প্রতিষ্ঠাতা তাসফিয়া তাসবিন ও রুবাইয়াত ফারহান, রিল্যাক্সি-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা জাহ্নবী রহমান।

সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ক্যাটাগরির অধীনে টার্টল ভেঞ্চার স্টুডিওর প্রতিষ্ঠাতা আনোয়ার সায়েফ ও শরাবন তহুরা এবং যাত্রীর প্রতিষ্ঠাতা আজিজ আরমান ও কনজিউমার টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে অ্যাগ্রোশিফ্ট টেকনোলজির সহ-প্রতিষ্ঠাতা দীপ্ত সাহা।

তাসফিয়া তাসবিন ও রুবাইয়াত ফারহান: তাসবিন ও ফারহান হলেন স্টার্টআপ মার্কোপোলো.এআই-এর প্রতিষ্ঠাতা। এটি ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসায়িক উদ্যোগের জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং সমাধান অফার করে, যা ফার্মগুলোকে দ্রুত বিজ্ঞাপনের অনুলিপি তৈরি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনায়াসে ক্রস-পোস্ট করতে সহায়তা করে।

কোম্পানির সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক অ্যাপটি মেশিন-লার্নিং মডেল ব্যবহার করে, যা প্যাটার্ন চিনতে পারে, বিজ্ঞাপনের পারফরম্যান্স ও পোস্ট করার সর্বোচ্চ অবস্থার পূর্বাভাস দিতে পারে। ব্যবসায় উদ্যোগগুলোকে স্বয়ংক্রিয় করতে এবং সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন অপ্টিমাইজ করতে, কনটেন্ট তৈরি করতে এবং গ্রহণেচ্ছু অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে সহায়তার জন্য এটির একটি বিশাল ভোক্তা ডেটাসেট রয়েছে।

জাহ্নবী রহমান: সাম্প্রতিক কম্পিউটার বিজ্ঞানের স্নাতক, জাহ্নবী রহমান মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক তরুণ বাংলাদেশিদের একটি সুবিধাজনক ডিজিটাল সমাধান প্রদানের জন্য রিল্যাক্স্রি প্রতিষ্ঠা করেছেন।

রিল্যাক্সি মুড চেক-ইন ও মেডিটেশনের মতো বিনামূল্যের অপশন অফার করে, কিন্তু চাহিদার ভিত্তিতে সাশ্রয়ী মূল্যে ভার্চুয়াল থেরাপি সেশন থেকে উপার্জন করে।

কোম্পানি ব্যবহারকারীদের সময়সূচী এবং প্রয়োজন মেটাতে তার অ্যাপে সাবস্ক্রিপশন পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করছে। এর অ্যাপটি সম্প্রতি বাংলাদেশে হুয়াওয়ের আইসিটি ইনকিউবেটর ২০২২-এ দ্বিতীয় রানার-আপ হিসাবে মনোনীত হয়েছে এবং ১৫,০০০-এরও বেশি ব্যবহারকারী এটি ডাউনলোড করেছেন।

আনোয়ার সায়েফ ও শরাবন তহুরা: তহুরা ও সায়েফ হলেন টার্টল ভেঞ্চার, বাংলাদেশের প্রথম ভেঞ্চার স্টুডিওর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। এটি স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সহায়তা দেয় ও উৎসাহিত করে।

২০১৮ সাল থেকে, এটি ৯০টি স্টার্টআপের সাথে কাজ করেছে, তাদের ১৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি বীজ মূলধন সংগ্রহে সাহায্য করেছে। প্রযুক্তিতে নারীদের জন্য এক্সিলারেটর প্রোগ্রাম চালানোর পাশাপাশি, টার্টল ভেঞ্চার ‘ইয়ং টার্টল’ নামে একটি প্রোগ্রামও চালায়, যা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এন্টারপ্রিনারশিপ প্রমোট করে।

আজিজ আরমান: প্রযুক্তির সাহায্যে বাংলাদেশের বিশৃঙ্খল পরিবহন সমস্যা সমাধানে সহায়তা করতে আরমান যাত্রীর সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। গত বছর, ঢাকা বাস মালিক সমিতি রাজধানীতে চলাচলকারী ৫ হাজার ৬৫০টি পাবলিক বাসের জন্য স্টার্টআপ ই-টিকিট সিস্টেম ব্যবহার করতে সম্মত হয়। এটি গ্রাহকদের জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। যাত্রী চার্টার্ড ও গাড়ি ভাড়া পরিষেবাও অফার করে।

২০২১ সালে কোম্পানিটি রিফ্লেক্ট ভেঞ্চারস, ব্রেইন-টু-ফ্রি ভেঞ্চার এবং এসকেবি প্রযুক্তি উদ্যোগের মতো বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১.২ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের প্রি-সিড সিরিজ সংগ্রহ করে, যা তার মোট তহবিলকে এ পর্যন্ত ৫.২৫ মিলিয়ন ডলারে উন্নিত করেছে।

দীপ্ত সাহা: দীপ্ত সাহা হলেন এগ্রোশিফ্ট টেকনোলজিস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিও। এটি ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি কৃষি সরবরাহ চেইন প্ল্যাটফম। অ্যাগ্রোশিফ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম করে, ভোক্তাদের জন্য ব্যয় হ্রাস করে এবং কৃষকদের ন্যায্য মূল্য পেতে সহায়তা করে।

গত বছর, এগ্রিটেক কোম্পানি আরএমজি গ্লোবাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জের জন্য এইচএন্ডএম-এর স্টিচ জিতেছে। পোশাক খাতে নারীদের জীবনযাত্রার উন্নতি করা এর লক্ষ্য। অক্টোবরে এটি শোরুক পার্টনার ও এংকরলেস বাংলাদেশের নেতৃত্বে একটি প্রাক-বীজ রাউন্ডে ১.৮ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে, যা এখন পর্যন্ত দেশের সবচেয়ে বড় তহবিল।

২০১৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ব্যতিক্রমী প্রচেষ্টার জন্য মোট ২৫ জন বাংলাদেশির নাম তালিকায় স্থান পেয়েছে। এ বছর ত্রিশ বছরের কম বয়সী সাত বাংলাদেশিকে তাদের অবদানের জন্য স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ