শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রকাশিত: সোমবার, মে ১৭, ২০২১
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ফটিকছড়ি :
ফটিকছড়ি উপজেলায় ঈদকে কেন্দ্র করে অনলাইনে লক্ষ লক্ষ টাকার বিক্রয় হয়েছে। উপজেলার কিছু তরুণদের উদ্যোগে গতবছরের ৪ই জুন ফেইসবুকে Fatikchhari Sell Bazar-FSB নামে একটি গ্রুপ খুলে যেখানে ইতিমধ্যেই সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজারেরও বেশি।
গ্রুপের এডমিন আরাফাত বিন ইউসুপ এর সাথে কথা বলে জানা গেছে এক বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই মোটর সাইকেল ও মোবাইলসহ গ্রুপে প্রায় দুই থেকে তিন কোটি টাকার ব্যবসা করছে এখানকার তরুন উদ্যোক্তারা।এসময় তিনি আরো বলেন এইবছর লকডাউনের মধ্যে যেখানে সব কিছু থমকে গিয়েছে সেখানে ফটিকছড়ি সেল বাজারে তরুণ উদ্যোক্তারা একটা অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
গ্রুপের এডমিন শুভ বলেন সাত লক্ষ জনসংখ্যার এই উপজেলায় ২লক্ষ ফেসবুক ব্যবহারকারী থাকতে পারে এর মধ্যে বেশিরভাগই আমার মতো কমবয়সী তরুণ।
তিনি আরো বলেন অনেকে আমার কাছে প্রশ্ন করে যে গ্রুপের মাধ্যমে আমার কি লাভ হচ্ছে তখন আমি হেসে বলি অসংখ্য মানুষের থেকে যে ভালোবাসা পাচ্ছি তার থেকে মূল্যবান আর কি লাভ থাকতে পারে।
গ্রুপের সদস্য ওয়াজিহা সাবরিনা বলেন “আমার কল্পনার বাইরে ছিলো যে আমি গ্রুপে কিছু একটা নিয়ে কাজ করব।আমি এই পর্যন্ত প্রায় ৫০০ এর অধিক পান্জাবী বিক্রি করেছি।যা অকল্পনীয়।
নিগার চৌধুরী নামের একজন উদ্যোক্তা কভার কাস্টম ডিজাইন নিয়ে কাজ করে সাথে পাঞ্জাবী শাড়ি নিয়ে ব্যবসা করেন শেষ ছয় মাসে অনলাইন ও অফলাইনে প্রচুর পাঞ্জাবি, ২শত এর বেশি শাড়ি বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান।
সালসালিন বুটিক নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকেও মন্তব্য করে বলেন সদস্য সংখ্যা দিয়ে এই গ্রুপটিকে মাপা যাবে না। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ গ্রুপটি।সেই সাথে এডমিন প্যানেলের পক্ষ থেকে দক্ষ লিডারশীপ গ্রুপটিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিজেদের তৈরী করা নতুন ডিজাইন গুলি নিয়ে ফেইসবুক বুস্ট করার চেয়েও এই গ্রুপে পোস্ট করে বেশি সাড়া পেয়েছি।
সুরাইয়া সুবহান নামের আরেক সদস্য গ্রুপে লিখেন সবাই তো জামা কাপড় বিক্রি করে সফল হয়েছে। আর আমি মিষ্টি দই বিক্রি করে অনেক খুশি।ফটিকছড়িতে মিষ্টি দয়ের এত বেশি চাহিদা হবে ভাবতেও পারি নাই।
পিংকি নামের একজন উদ্যোক্তা বলেন আমার সখ ছিলো পিঠাপুলি নিয়ে কাজ করা।মজা করে গ্রুপে পোস্ট ও করেছিলাম।সিরিয়াসলি নিয়ে পোস্ট করা হয়নি।কিন্তু কে জানতো এখন কাজ এ পরিণত হবে।আলহামদুলিল্লাহ এ গ্রুপের মাধ্যমে আজ সফল।এখন আমার রেগুলার পুলিপিঠা তৈরি করতে হয়।এটা আমার জন্য বড় পাওয়া।
শেখ মঈনুদ্দিন নামের একজন জানান শুধু রমজান মাসেই ৭ কেজি খেজুর,প্রায় ১৫ কেজি মধু,২০ লিটার সরিষার তেল বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছে।
জিন্নাত আরা তিসা নামের হোম মেইড ফুড নিয়ে কাজ করা এক উদ্যোক্তার মতে মাত্র ৭০/৮০ টাকা মূলধন দিয়ে কাজ শুরু করে, ৪/৫ মাসের ব্যবধানে এখন ৫০০০০ এর বেশী বিক্রি করেছেন।যা একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।
এছাড়াও ফাতেমা ফ্যাশনের কাপড় বিক্রি, জান্নাত বুটিকসের আনলিমিটেড ত্রিপিস বিক্রি, ফুড হ্যাকারের সহজ ফুড ডেলিভারী,এইচ এম নেওয়াজ আবিদের পাঞ্জাবি বিক্রি, JA Mart এর জুতা ও পাঞ্জাবি বিক্রি, উম্মে হানি শাওনের নিজের ডিজাইন করা নামাজের হিজাব ও বেবী ড্রেস বিক্রি ছিলো চোখে পড়ার মতো।
বিক্রেতারা যেই রকম পণ্য কিনে খুশি তেমনি ক্রেতারা মনের মতো পণ্য পেয়ে আনন্দিত।
এর মধ্যেই অনলাইনে অনেক প্রতারক চক্র বিভিন্নভাবে ঠকিয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেক ক্রেতারা।তবে গ্রুপে রেজিষ্ট্রেশনকারী বিক্রেতারা মুটামুটি ভালো ব্যবহার দেখিয়েছে বলে জানা যায়।
ঈদের আজ চতুর্থ দিন তারপরও গ্রুপের সদস্যরা ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় সহ বিভিন্নভাবে গ্রুপকে মাতিয়ে রেখেছে।