বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩
প্রকাশিত: বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩
বিনোদন ডেস্ক::
বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচিত মুখ সাদেক বাচ্চু। পর্দায় প্রায় পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তাকে হারানোর দুই বছর আজ। ২০২০ সালের আজকের এই দিনে, অর্থাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পরপারে চলে যান এই অভিনেতা।
বাংলা চলচ্চিত্রে সাদেক বাচ্চুকে স্বাভাবিকভাবে খল অভিনেতা হিসেবেই চিনেন অনেক দর্শক। এই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে রয়েছেন তিনি। তার প্রকৃত নাম মাহবুব আহমেদ সাদেক। মাত্র আট বছর বয়সে অভিনয় জগতে অভিষেক করেছিলেন তিনি।
১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় জন্ম সাদেক বাচ্চুর। ম্যাট্রিক সম্পন্ন করার পরই বাবাকে হারান। এরপর মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাবার মতো ডাকবিভাগের চাকরিতে প্রবেশ করেন তিনি। যা ২০১৩ সাল পর্যন্ত করেছেন।
১৯৯১ সালে প্রথম মাহবুব আহমেদ সাদেক থেকে সাদেক বাচ্চু নাম হয় তার। ১৯৬৩ সালে বেতারে তার প্রথম নাটক ‘খেলাঘর’ প্রচার হয়। তারপর মঞ্চনাটক ও টেলিভিশন নাটকের পর অভিষেক হয় চলচ্চিত্রে। এরপর নির্মাতা এহতেশাম মাববুব আহমেদকে ‘সাদেক বাচ্চু’ নাম দেন। সেই সময় ‘চাঁদনী’ চলচ্চিত্রে কাজ করছিলেন তিনি।
সাদেক বাচ্চু পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে চাকরিতে যোগদান করলেও অভিনয়ের প্রতি ভীষণ আগ্রহ ছিল তার। বেতার ও মঞ্চে কাজের পর ১৯৭৪ সালে প্রথম টেলিভিশন নাটক ‘প্রথম অঙ্গীকার’-এ অভিনয় করেন তিনি। এরপর প্রায় হাজার খানেক নাটকে দেখা গেছে তাকে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক হচ্ছে ‘নকশী কাঁথার মাঠ’, ‘গ্রন্থিক গণ কহে’, ‘জোনাকী জ্বলে’, ‘পূর্ব রাত্রি পূর্ব দিন’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’, ‘ঝুমকা’, ইত্যাদি।
১৯৮৫ সালে ‘রামের সুমতি’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয় করে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এরপর আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাননি। তারপর ‘সুখের সন্ধানে’ চলচ্চিত্রে খল অভিনেতা হিসেবে দেখা যায় তাকে। এতে অভিনয়ের পর সাড়া ফেলেন তিনি। তারপর অল্প সময়ের মধ্যেই নেতিবাচক চরিত্রের জন্য নির্ভরযোগ্য একজন তারকা হয়ে উঠেন। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। যদিও ইতিবাচক চরিত্রেও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে দেখা গেছে এই অভিনেতাকে।
সাদেক বাচ্চু প্রায় পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলো ‘বধূবরণ’, ‘মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘প্রিয়জন’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘লাল বাদশা’, ‘মরণ কামড়’, ‘বন্ধু যখন শত্রু’, ‘জিদ্দি মামা’, ‘রাজাবাবু- দ্য পাওয়ার’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২’, ‘কোটি টাকার কাবিন’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘লাভ ম্যারেজ’, ‘আরও ভালোবাসবো তোমায়’, ‘বসগিরি’ ইত্যাদি।
সাদেক বাচ্চু চলচ্চিত্রের দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০১৮ সালে ‘একটি সিনেমার গল্প’-এ অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন গুণী এই অভিনেতা।