বুধবার, ৩১ মে ২০২৩
প্রকাশিত: শুক্রবার, মে ৫, ২০২৩
মমতাজ রোখসানা আখতার
মানসম্মত ও গুণগত শিক্ষা একটি পুরো জাতির ভাগ্য পরিবর্তনের প্রধান সহায়ক যদি সে শিক্ষা হয় সার্বজনীন। তবে এখানে মানসম্মত ও গূণগত শিক্ষা বলতে মানবিক, যুক্তিনির্ভর, আধুনিক ও বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা কে বুঝানো হচ্ছে। তবে সময়ের প্রয়োজনে আমাদের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবিষয় সমূহ মূখস্থ করার পরিবর্তে আত্মস্থ করার অভ্যাস তৈরী করতে হবে। শিক্ষা আত্মস্থ হবে তখনি যখন সেটা হবে সার্জনীন ও সৃজনশীল। কারন সৃজনশীলতার মাধ্যমেই সৃষ্টকৃত সমস্যার সমাধান সম্ভব বলেই আমার বিশ্বাস। মানসম্মত ও গূণগত শিক্ষার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষানীতি ও শিক্ষা কারিকুলাম। যদি ও স্বাধীনতা পরবর্তী ৫২ বছরে ও আমাদের দেশের শিক্ষানীতি সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয় নি, তবে রুপকল্প-২০২১ বাস্তবায়ন-২০২২ নতুন ধারার এই শিক্ষাকারিকুলাম আমাদের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমভিত্তিক, সার্বজনীন ও বিজ্ঞাননির্ভর শিক্ষায় কতটুকু প্রগতিশীলভাবে এগিয়ে নিয়ে যায় সেটা সকলের দেখার বিষয়। হ্যাঁ আমি এখা্নে বলছি বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় নতুন শিক্ষাকারিকুলাম প্রনয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমেই নতুন প্রজন্ম শিক্ষার গুনগত মান অক্ষুন্ন রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। তবেই এই কারিকুলামে বিশেষ লক্ষ্যণীয় দিক হচ্ছে, ‘শিখন হবে অভিজ্ঞতা ভিত্তিক এবং মূল্যায়ন হবে যোগ্যতা ভিত্তিক।‘ বিগত সকল শিক্ষানীতির চেয়ে নতুন ধারার এই শিক্ষানীতি আমাদের নতুন প্রজন্মকে যোগ্যতা নির্ভর শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে এদেশের ভাগ্য পরিবর্তনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনেকরি শিক্ষার্থীদের শিখনের প্রধান পঅন্তরায় হচ্ছে মুখস্থ বিদ্যা, যেটা আমরা বিগত বছরগুলোতে প্রতি্নিয়ত করে আসছিলাম। যার কারনে এই জাতি এ যাবত পর্যন্ত গূনগত শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য কোন ফলাফল অর্জনে সক্ষম হয় নি। নতুন ধারার এই শিক্ষাব্যবস্থায় থাকছেনা শিক্ষার্থীর প্রধান অন্তরায় মুখস্থ বিদ্যা। শিক্ষার্থীর শিখন হবে উৎসাহ উদ্দীপনায় ও খেলতে খেলতে, অজ্ঞিগতা হবে বাস্তবতা ভিত্তিক।যোগ্যতার মূল্যায়নে শিখনের ভাসা ভাসা পদ্ধতি অতিক্রম করে শিক্ষার্থীর শেখন হবে শেকড় ভিত্তি্ক। এই শেকড় ভিত্তিক শিখন ব্যবস্থায় শিক্ষার গুনগতমান ফিরে এসে দেশ পরিবর্তনের ধারায় এগিয়ে যাবে। সেই পরিবর্তনে থাকবে দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাস্কৃতিক প্রেক্ষাপট। কিন্তু আমার বুঝে আসে না এই শিক্ষাক্রম মাঠ পর্যায়ের সাধারন মানুষের কাছে তেমন গ্রহণযোগ্য নয় কেন? মাঠ পর্যায়ের কিছু প্রতিবেদকের রিপোর্ট উঠে এসেছে সাধারণ মানুষের হতাশার এই চিত্র। অভিভাবকরা ভীষণ চিন্তিত তাঁর সন্তানের অনাগত ভবিষ্যত নিয়ে। কা্রণ এই শিক্ষা্ক্রমে থাকছে না কোন মুখস্থবিদ্যা আর সরাসরি পরীক্ষা। এখানে আছে শিখনকালীন মূল্যায়ন ৬০ শতাংশ ও বছর শেষে সামষ্টিক মূল্যায়ন ৪০ শতাংশ। যদি ও এই শিক্ষাক্রম সারা দেশে ২০২৩ সালে অর্থাৎ এই বছর মাধ্যমিকে ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীকে নিয়ে এবং প্রাথমিকে ১ম শ্রেণী ও ২য় শ্রেণি নিয়ে শুরু হয়েছে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হবে। ২০২৫ সাল থেকে সারা দেশে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হবে। তাছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমে নবম থেকে দশম শ্রেণীতে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকে কোন গ্রুপ থাকছে না, এ ছাড়া পঞ্চম শ্রেণীর প্রাথমিকে শিক্ষা সমাপনী ( পিইসি) এবং অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা ও থাকবে না। শিক্ষা ব্যবস্থার এই নতুন ধারার সংস্কার গুনগত শিক্ষায় বিশেষ পরিবর্তন আসবে বলেই সুশীল সমাজের বিশ্বাস। কারন শিক্ষার্থী শিখন অভিজ্ঞতা লাভ করবে বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে আর বাস্তব শিক্ষা সব সময় টেকসই হয়। নতুন শিক্ষাক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রায় দেশের সকল শিক্ষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের উপযোগি করেছেন। মাঠ পর্যায়ে বিচরন করে দেখলে দেখা যাচ্ছে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সেটা আনন্দের সাথে গ্রহন করছে। শিশুর শিখন হবে উৎসাহ উদ্দীপনা ভিত্তিক, আনন্দের সাথে ও খেলতে খেলতে আর এই শিক্ষাক্রমে সেটা শতভাগ পূর্ণ হবে বলেই আমার বিশ্বাস। অভিভাবক ও মাঠ পর্যায়ের সাধারন মানুষের মাঝে এই বিশ্বাস স্থাপন করার দায়িত্ব সরকার ও শিক্ষক সমাজের। অভিভাবক ও মাঠপর্যায়ের সাধারন মানুষ এই শিক্ষাক্রম নিয়ে অস্থিরতায় ভূগলে নতুন ধারার এই শিক্ষাক্রমের সফল বাস্তবায়ন অনেক কঠিন হয়ে যাবে। তাদের বুঝাতে হবে নতুন শিক্ষাক্রমের অভিলক্ষ সম্পর্কে।
● সকল শিক্ষার্থীর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা বিকাশে কার্যকর ও নমনীয় শিক্ষাক্রম প্রণয়নর
● শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষার্থীর বিকাশ ও উৎকর্যের সামাজিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা
এই ক্ষেত্রে শিক্ষকদের শিখন-শিখানো কৌশল এ আন্তরিক হতে হবে। শিখন- শিখানো কৌশলগুলো হবেই ঠিক এই রকমঃ