শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩
প্রকাশিত: সোমবার, মার্চ ৬, ২০২৩
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবের শিরিন ম্যানশনের তিন তলায় কমপক্ষে পাঁচ কেজি বিস্ফোরকের শক্তি জমা হয়েছিলো। বদ্ধ ঘরে জমে থাকা গ্যাসের কারণে এই বিস্ফোরণ।
তবে, গ্যাসের উৎসটি কোথায় সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্যুয়ারেজ লাইন থেকে আসা মিথেন গ্যাসে এতো বড় ও শক্তিশালী বিস্ফোরণ সম্ভব নয়।
সায়েন্স ল্যাবের শিরিন ভবনের তিন তলায় বিস্ফোরণের পর সেটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস। প্রতিটি ঘটনার পরই এমন একটি ব্যানার ঝুলিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। অথচ দুর্ঘটনার পরে নয়। বরং দুর্ঘটনার আগেই রাজধানীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করার কথা অনেকদিন ধরেই বলে আসছেন বিশেষজ্ঞ ও নগরবিদরা।
বিস্ফোরণের ধাক্কায় তিন তলার দেয়ালগুলো উড়ে গেছে। সেখানে কোন গ্যাস সংযোগ ছিলো না। তাহলে এতো ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণ কি?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানীর বেশিরভাগ গ্যাস ও সুয়ারেজ লাইনগুলো ৪০ থেকে ৫০ বছরের পুরানো। এগুলো কখনও মেরামত করা হয় না। মাটির নিচে গ্যাস লাইনের ফুটো থেকে বা অন্য কোনভাবে ভবনের সুয়ারেজ লাইনের মাধ্যমে ভেতরে গ্যাস জমা হতে পারে। তবে সুয়ারেজের গ্যাসে এতো বড় বিস্ফোরণ সম্ভব নয়।
বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগ সহযোগী অধ্যাপক ড. ইয়াসির আরাফাত খান বলেন, যে মাত্রার বিস্ফোরণ হয়েছে, তাতে কমপক্ষে পাঁচ কেজি বিস্ফোরকের শক্তি দরকার।
তিনি জানান, দুই বছর আগে মগবাজার এলাকার একটি ভবনে যে বিস্ফোরণ হয়েছিলো তাতে প্রায় তিন কেজির মত গ্যাসের শক্তি জমা হয়েছিলো। এই বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা, রাজধানী ঢাকায় এমন বিস্ফোরণের ঝুঁকি বাড়ছে। কারণ, নগরীর বেশিরভাগ গ্যাসলাইন পুরনো এবং কোন ধরনের রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না।
এদিকে, রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব এলাকায় ভবনে বিস্ফোরণটি দুর্ঘটনা জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেছেন, সম্ভবত দীর্ঘদিন জমে থাকা গ্যাস থেকে এ বিস্ফোরণ হয়েছে।
সোমবার (৬ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় পল্লবী ফায়ার স্টেশন উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, এটা বিশাল দুর্ঘটনা। এটা অন্য কোনো কারণে ঘটেছিলো কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নাশকতার আলামত মেলেনি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, সম্ভবত দীর্ঘদিন জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে এই দুর্ঘটনা।
বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওই তিনজনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তিরা হলেন নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার বটেশ্বর গ্রামের ৩১ বছর বয়সী সাদিকুর রহমান তুষার। রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধুলদী গ্রামের ৪৪ বছর বয়সী সফিকুজ্জামান ও গাজীপুরের টঙ্গী কোনাপাড়া এলাকার ৬৩ বছর বয়সী আবদুল মান্নান।