শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ছয় মাসের দায়িত্বে নানা অনিয়ম সুজনের, রেজাউল করলেন তদন্ত কমিটি

প্রকাশিত: শনিবার, মে ২২, ২০২১

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ছয় মাসের জন্য প্রশাসক ছিলেন খোরশেদ আলম সুজন। মেয়াদকালীন সময়ে স্থাপনা বরাদ্দে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধেই। সে সময় বিভিন্ন এলাকায় ১২ জায়গা ১০ জনকে বরাদ্দ দেয়া হয়। যারা সুজনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। বরাদ্দ দেওয়া জায়গার পরিমাণ ১৭ হাজার ১৮৮ বর্গফুট। এলাকা ভেদে প্রতি বর্গফুট সর্বনিম্ন এক টাকা ৮০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ৮৫০ টাকায় মাসিক ভাড়া ধার্য করা হয়।

জানা যায়, নগরীর ঝুমুর সিনেমা হলের উত্তর পাশে জয় পাহাড় মৌজায় ৫৪০ বর্গফুট খালি জায়গা বর্গফুট প্রতি মাসে পাঁচ টাকা ভাড়ায় রাবেয়া বেগমকে, ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস ভবনের উত্তর ও পশ্চিম পাশে এক হাজার ৭৫৭ বর্গফুট খালি জায়গা সমীর মহাজন লিটনকে ব্যবহারে অনুমতি দেওয়া হয়। প্রতি বর্গফুটের মাসিক ভাড়া ধরা হয় ১০ টাকা। ইউনুছ মিয়া মেটারনিটি সংলগ্ন এক হাজার ৬৪ বর্গফুট খালি জায়গা প্রতি বর্গফুট মাসিক পাঁচ টাকা ভাড়ায় খলিলুর রহমান নাহিদকে, প্রতি বর্গফুট ১০ টাকা মাসিক ভাড়ায় কে সি দে রোড গণশৌচাগারের পশ্চিম পাশে পরিত্যক্ত ৩৭৬ বর্গফুট খালি জায়গা জানে আলমকে, প্রতি বর্গফুট এক টাকা ৮০ পয়সা মাসিক ভাড়ায় মাদারবাড়ি ওয়ার্ড অফিস সংলগ্ন ৬ হাজার ৫৩৪ বর্গফুট খালি জায়গা খলিলুর রহমান নাহিদকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়। এছাড়া শাহ আমানত মার্কেটের সিঁড়ির উত্তর পাশে বারান্দায় ১৫৩ বর্গফুট খালি জায়গা মাসিক দুই হাজার ২৯৫ টাকা ভাড়ায় এবং শাহ আমানত মার্কেটের সামনে আইএফআইসি ব্যাংকের বারান্দার প্রথম তলার ছাদের ওপর ৩৯০ ফুট জাযগা মাসিক পাঁচ হাজার ৮৫০ টাকা ভাড়ায় মো. শাহাজাহান চৌধুরীকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়।

এদিকে স্থাপনা বরাদ্দের অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হলে গত ২৫ এপ্রিল নবনির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে বাগমনিরাম ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে ও সদস্য সচিব প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। সদস্য করা হয়েছে আইন কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব কুমার দাশ ও সহকারী এস্টেট অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন। এ কমিটি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে।

এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অনিয়মের খবর প্রকাশ হওয়ার পর সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বলেন, কর্পোরেশনের জায়গা-সম্পত্তি বিভিন্নজনে লুটেপুটে খাচ্ছে। অনেক জায়গার কোনো হদিস ছিল না, কর্পোরেশনের রেকর্ডপত্রেও ছিল না। খুঁজে বের করে জায়গাগুলোকে সব নিয়মনীতি মেনে অস্থায়ী ভিত্তিতে স্বল্প মেয়াদের জন্য ইজারা দিয়েছি। বেহাত জায়গা উদ্ধার এবং অ-রাজস্ব খাতের জায়গাকে রাজস্ব খাতে এনে আয় বৃদ্ধি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি, আমার সময়কালীন সিটি কর্পোরেশনের জায়গা বরাদ্দের নিয়ম-নীতির কোনো ব্যত্যয় হয়নি। বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যারা সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছে, তারাই বরাদ্দ পেয়েছে। যা করেছি কর্পোরেশনের আয়ের খাতকে মজবুত করার জন্যই করেছি। এরপরও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যদি কর্পোরেশন মনে করে, কোনোটাতে নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে, তাহলে কর্পোরেশন চাইলে তা বাতিল করতে পারে।

সর্বশেষ