বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩
প্রকাশিত: রবিবার, মে ২, ২০২১
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট :
নগরীর চান্দগাঁও থানার ওসি মুস্তাফিজুর রহমানের অপসারণ করার দাবি জানিয়েছেন ৩৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২’শ শিক্ষক।
রোববার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান শিক্ষকরা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নুশিস সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন খান।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকায় অবস্থিত হাজেরা-তজু স্কুল এন্ড কলেজ ও চিটাগাং কিন্ডারগার্টেন স্কুল চান্দগাও থানার ওসির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সন্ত্রাসীরা তাণ্ডব চালিয়েছে। তারা দিন দুপুরে স্কুলের সীমানা প্রাচীর ভেঙে প্রবেশ করে। স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব, অফিস কক্ষসহ ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এসময় স্কুলের কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ডদের বেধড়ক পিটিয়ে আহত করা হয়। স্থানীয় সন্ত্রাসী শাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় চান্দগাঁও থানায় মামলা করতে গেলে গড়িমসি করেন ওসি মুস্তাফিজুর রহমান। অনেক তালবাহানা করে নামমাত্র মামলা দায়ের করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সন্ত্রাসী শাহেদুল ইসলাম ও ওসি মুস্তাফিজুর রহমানের যোগসাজশে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টা ও গায়েবী মামলা দায়ের করেন। যেখানে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও নুশিস সভাপতি শিল্পপতি মুজিবুর রহমানকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। অথচ, মুজিবুর রহমান গত মার্চ মাস হতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন এখনো। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের বহিঃপ্রকাশ।
এরইমধ্য ওসি মুস্তাফিজুর রহমান শিল্পপতি মুজিবুর রহমানের কাছে বিভিন্ন মাধ্যমে চাঁদা দাবি করেন। টাকা না পেয়েও তিনি আরো প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ওসির এহেন ভূমিকার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা সরকারের সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি কর্তৃক ৩৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে নিজস্ব অর্থায়নে। এতে করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে ব্যাপক। বর্তমানে নুরুল ইসলাম বিএসসির (নুরুল ইসলাম শিক্ষা সমন্বয় পরিষদ, নুশিস) প্রতিষ্ঠিত এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নুশিসের সভাপতি হিসেবে পরিচালনা করছেন সাবেক মন্ত্রী পুত্র মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
হামলাকারীরা ফেইসবুক ও গণমাধ্যমকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি জমি সংক্রান্ত বিরোধ বলেও প্রচার করা হচ্ছে। তবে আমাদের মনে হচ্ছে, সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এটি একটি পরিকল্পিত কাণ্ড। যেখানে সন্ত্রাসী শাহেদকে সহায়তা করেছে চান্দগাঁও থানার ওসি মুস্তাফিজুর রহমান। সারাদেশে সাম্প্রতিককালে নামা ইস্যুতে সরকার বিরোধী গোষ্ঠী সহিংসতা চালিয়েছে। এখনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে সরকার বিরোধীদের। সরকারের সাবেক মন্ত্রীর প্রতিষ্ঠানে ন্যাক্কারজনক হামলা ও তার পুত্রের নামে গায়েবী মামলা দায়ের করে সরকারের ইমেজ নষ্ট করতে পায়তারা চালাচ্ছে। স্কুলে তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িতরা সরকার বিরোধী রাজনীতিতে সক্রিয়।
১২’শ শিক্ষকের পক্ষে দবির উদ্দিন খান বলেন, অবিলম্বে চান্দগাঁও থানার ওসি মুস্তাফিজুর রহমানকে অপসারণ করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত পবিত্র জায়গায় তাণ্ডব চালানো সন্ত্রাসী শাহেদুল ইসলামসহ জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায়, ৩৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১২’শ শিক্ষক, ১২ হাজার শিক্ষার্থীসহ নুরুল ইসলাম বিএসসি ও মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে।