খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ছে

আদালত প্রতিবেদক :

বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং দেশেই চিকিৎসা নিতে হবে, এ দুটি শর্ত বহাল রে‌খে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়া‌নো হ‌য়ে‌ছে। এ বিষ‌য়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

আইনমন্ত্রী বলেছেন, আগের বাড়ানো মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে একই শর্তে মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হচ্ছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, আবেদনে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি ছিল। কিন্তু, সে বিষয়ে আইনে কোনো সুযোগ নেই। আইনি সুযোগ থাকলে আমরা বিবেচনা করতাম।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বাক্ষরের পর ফাইল এরইমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চলে গেছে। এটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে না।

উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ আবেদনের বিষয়ে মতামত জানতে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণাল‌য়ের মতামত পাওয়ার পর এখন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতা বাড়লে মাঝে মাঝে তাকে হাপাতালে নিতে হচ্ছে। দুটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করা হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এর পর ৩০ অক্টোবর এ মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।

একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন একই আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। এরপর পরিবারের আবেদনে দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ সাতবার বাড়ানো হয়।