বৃহস্পতিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৩
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, এপ্রিল ৬, ২০২১
করোনার সংক্রমণ কমাতে চলাচল সীমিত করে সবাইকে ‘ঘরবন্দী’ করতেই দেওয়া হয় ৭ দিনের লকডাউন। তবে লকডাউনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনেও ঘরে রাখা যায়নি মানুষকে। জীবিকার তাগিদে ভোগান্তি সয়ে ঝুঁকি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ। মঙ্গলবার নগরীর বিভিন্ন শিল্প এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
ভাইরাসের বিস্তার রোধের চেষ্টায় জনসাধারণের চলাচলে ১১টি বিধিনিষেধ দিয়ে লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। ওই প্রজ্ঞাপনে ৫ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত সারা দেশে এসব বিধি নিষেধ কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে লকডাউনের প্রথম দিনে করোনা রোধে ও সচেতনায় ২০ জন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়েছে। মঙ্গলবারও সকালে তিনজন ও বিকালে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট নগরীতে অভিযান পরিচালনা করেছেন। ম্যাজিস্ট্রেট থাকলেও জরিমানা, মাস্ক না পরাসহ নানা কারণে অর্থদণ্ড দিলেও সচেতনতা নেই সাধারণ জনগণে। কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বিধিনিষেধ ভেঙে ছুটছেন জীবিকার তাগিদে।
শিল্পকারখানা খোলা থাকার কারণে এ দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কারখানার শ্রমিকদের। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় দ্বিগুণ ভাড়ায় কখনো হেঁটে, কখনো রিকশায় আবার কখনো মিনিট্রাকে চড়ে পৌঁছাতে হয়েছে গন্তব্যে। এসব শ্রমিকদের কারখানায় এমনিতেই যেতে দুর্ভোগে পড়তে হয়। তার ওপর লকডাউনে যুক্ত হয়েছে বেশি ভাড়ার খড়গ। গণপরিবহন না থাকায় রিকশাই এখন শেষ ভরসা। নগরজুড়ে চলছে রিকশার রাজত্ব। রিকশার বাড়তি ভাড়ায় শেয়ারে যেতে দেখা দেখে অনেককে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে অপেক্ষমাণ অফিসগামী মানুষের জটলা ছিল চোখে পড়ার মতো। সড়কে রিকশার পাশাপাশি বেশি চলাচল করতে দেখা গেছে প্রাইভেট গাড়ি। গণপরিবহন না চললেও প্রাইভেট কার চলছে বিনাবাঁধায়।
পোশাক কারখানায় চাকরি মারুফ হোসেন বলেন, সাধারণ মানুষের ভালোর জন্য লকডাউন দেওয়া হলেও আদৌও মানুষ মানছে কিনা তা নিয়ে নিবিড় তদারকি নেই। আবার লকডাউন দিয়ে অফিস আদালত খোলা রাখার যৌক্তিকতাও নেই। কর্মস্থলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে যারা বাসা থেকে বের হয়েছেন তাদের কী পরিমাণ ভোগান্তি তা শুধু তারাই জানেন। ভালো ভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমরা চাকরি করছি। কিন্তু অফিসে আসা-যাওয়াতে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে এতে মাস শেষে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হবে।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কর্মস্থলমুখী মানুষের প্রধান বাহনে পরিণত হয় সিএনজি ট্যাক্সি, রিকশা এবং মোটরসাইকেল। বাড়তি চাহিদার সুযোগ নিয়ে এসব বাহনের চালকেরা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করেন বাড়তি টাকা। কাজীর দেউড়ি এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক নবাব আলীর সাথে। তিনি বলেন, সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে ২০০-৩০০ বা তার চেয়ে বেশি ভাড়া পায়। কিন্তু লকডাউনের কারণে এখন সেটা হচ্ছে না। এখন আমরা তো দিনে এনে দিনে খায়, আমাদের তো বের হতে হচ্ছে। মানুষ কম থাকার কারনে তাই আমরাও ভাড়া বেশি নিচ্ছি।