বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩
প্রকাশিত: শনিবার, এপ্রিল ১৭, ২০২১
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এক সপ্তাহের জন্য সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পরও মানুষ তা মানতে অনীহা দেখাচ্ছে। আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, দোকানপাট, উম্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মানা হচ্ছে না। কেউ কেউ মানতে চাইলেও পাশের জনের অসচেতনতার কারণে তা মানা সম্ভব হচ্ছে না। বিধিনিষেধ মানতে মানুষকে বাধ্য করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জোরালো তৎপরতা নেই। ফলে সবকিছুতেই এক ধরনের শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। এতে করোনার সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকারের নির্দেশনায় খোলা স্থানে কাঁচাবাজার স্থাপনের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। পুরানো কাঠামোতেই কাঁচাবাজারসহ নিত্যপণ্য বসছে। এতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। পাড়া-মহল্লা এমন কি উম্মুক্ত স্থানেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। মাস্ক পরা তো দূরের কথা মানা হচ্ছে না কোনো ধরনের সামাজিক দুরত্ব।
স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষকে বাধ্য করতে প্রশাসনের তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। কিছু স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশের তদারকি থাকলেও তা ছিল খুবই সীমিত। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি না মানার জন্য প্রশাসন মানুষের অসচেতনতাকে দায়ী করেছে।
এদিকে উপজেলায় নতুন করে আরও ১৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার দুপুরে উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজারে দেখা গেছে,আগের নির্ধারিত স্থানেই বাজার বসেছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা গাদাগাদি করে পণ্য কেনাবেচা করছেন। অনেকের মুখেই মাস্ক নেই। সামাজিক দুরত্বও পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।
কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা নুরুল হক বলেন, মাস্ক বেশিক্ষণ পরে থাকার উপায় নেই। মাস্ক পরে কথা বললে ক্রেতারা ঠিকমতো শোনে না।
এর আগে বেলা ১১টায় বটতলী রুস্তমহাটে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতার বেশ ভিড়। ১০ জনের মধ্যে তিন-চার জন ঠিকমতো মাস্ক পরলেও বাকিরা নাক-মুখের পরিবর্তে মাস্ক পরেছেন গলায়। বিক্রেতারাও স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীন। বাজারে সামাজিক দুরত্ব না মেনে অনেকে একজনের ওপর হুমড়ি খেয়ে পণ্য কিনছেন।
বন্দর কমিউনিটি সেন্টারের একটি ফার্মেসীতে দেখা যায়,সামাজিক দুরত্ব কার্যকরের কোনো ব্যবস্থা নেই। লোকজন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ওষুধ কিনছেন। সেখানে দোকানে বসে অনেকে আবার আড্ডা-গল্প করছেন।
এদিকে লকডাউনের কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও উপজেলার বিভিন্ন সড়কজুড়ে চলছে অটোরিকশার রাজত্ব। সড়কে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করায় মানুষ সহজে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন। বিনাপ্রয়োজনে হাটবাজার ও দোকানে মানুষ আড্ডা-গল্প করছেন। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বাজারে যাচ্ছেন অসচেতন মানুষ।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন,সকাল থেকে পুলিশের টহল-তল্লাশী অব্যাহত আছে। বিনা প্রয়োজনে কেউ বের হলে গাড়িগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষকে সচেতনতা করতে মাইকিং করা হচ্ছে। কেউ মাস্ক না পরলে পরার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন,সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।